রক্তমাখা হাতে হিন্দুবিরোধী মনিরুল ইসলাম আজ বিজেপিতে !- ভোট বাড়বে নাকি কমবে?

২০১৪ সালে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ থেকে ২ টি লোকসভা আসনে জয়লাভ করেছিল। ২০১৯ সালে সেই আসন বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ টিতে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে BJP শক্তিশালী হওয়ার পেছনে কারণ কি? এর উত্তর হিন্দু একতা। তৃণমূল হিন্দুদের সাথে অন্যায় করে শুধুমাত্র মুসলিম সম্প্রদায়ের তোষণ করেছে। মূলত এই কারণের ভিত্তিতে হিন্দুরা এক হয়ে BJP কে ভোট দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে BJP আসার প্রধান ও প্রধান কারণ হিন্দু একতা। অন্যদিকে ২০১৪ সালের পরথেকে BJP এর প্রচারের কথা বলতে গেলে- সোশ্যাল মিডিয়ায় হিন্দুত্ববাদী ও রাষ্ট্রবাদীদের জোট। রাজ্যবিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য নিজেদের IT সেলের বড়াই করলেও আসল প্রচার নিঃস্বার্থভাবে হিন্দুত্ববাদী ও রাষ্ট্রবাদীরাই করেছিল।

ফেসবুক, হোয়াটসআপ ইত্যাদিতে গ্রুপ, পেজ তৈরি করে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থনে প্রচার সাধারণ মোদীভক্তরাই করেছিল। অন্যদিকে মাঠে নেমে কাজের কথা বললে নিচু তলার কর্মীরা নিজের প্রানের ঝুঁকি নিয়ে প্রচার কাজ চালিয়েছিল। রাজ্যবিজেপির নেতারা যখন তৃণমূলের ভয়ে সভা পর্যন্ত করতে পারতো না তখন নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দলকে মজবুত করা এবং রাজ্যের মানুষের ভরসা জেতার কাজ করেছিল নিচুতলার কর্মীরা।
নিচু তলার কর্মীরা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সমর্থকরা সংগঠনকে এতটাই মজবুত করেছিল যে লোকসভা নির্বাচন সামনে আসার সাথে সাথে বিজেপি ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করে।

তবে এখন কিছুজন সংগঠন শক্ত হওয়ার পুরো ক্রেডিট তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের মাথায় চাপিয়ে দিতে রাজি। ২ থেকে ১৮ হওয়ার কৃতিত্ব কিছু বিশেষ নেতাদের নামে দিতেই রাজি কিছুজন। অবশ্য ভারতের রাজনীতি এটাই, অন্যের পরিশ্রমের ক্রেডিট নিজের মাথায় নেওয়ার খেলা।  ক্রেডিট নেওয়ার খেলা রাজনীতির সাধারণ বিষয়, তাই এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। কিন্তু রাজনীতি খেলতে গিয়ে যখন কেউ দলকে ভোটার বিরোধী করে তোলে তখনই শুরু হয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। আসলে বঙ্গবিজেপি এখন কট্টরপন্থী তৃণমূল নেতা মনিরুল ইসলাম আপন করে নিয়েছে। বঙ্গবিজেপির নেতারা জাঁকজমক করে মনিরুল ইসলামকে পার্টিতে ঢুকিয়েছে।

BJP ক্ষমতায় এলে মনিরুল জেলে ঢোকানো হবে এমন স্বপ্ন দেখত বিজেপির নিচু তলার কর্মীরা। কিন্তু সেই স্পন হয়তো এবার শেষ, এবার থেকে মনিরুল ইসলামের কথামত কাজ করতে হতে পারে অনেক BJP এর অনেক নিচুতলার কর্মীকে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মাঠে সব স্থানেই অনেকের বিজেপি কর্মীরা বঙ্গবিজেপির এই সিদ্ধান্তের বিরোধ করেছে। অনেক ভোটাররা লিখেছেন,- ” যার সন্ত্রাস থেকে বাঁচতে বিজেপিকে ভোট দিলাম তাকেই আপন করে নিল বঙ্গবিজেপি।”

কিছুজন লিখেছেন- “লাভপুরে হিন্দু মেয়ে অপহরন এ যার নাম উঠে এসেছিলো,সেই লাভপুরের MLA মনিরুল আজ বিজেপিতে!” কেউ কেউ বলেছেন- “‘জয় শ্রী রাম বললে গলা কেটে দেব…’
বক্তা:- মণিরুল ইসলাম। বর্তমানে বিজেপির সম্পদ।” অনেকের মত, রাজ্যের বিজেপি ক্ষমতায় এলে যাতে মন্ত্রীপদ পাওয়া যায় সেই লোভে BJP এর কিছু নেতা পার্টির প্রতি নিজের ক্রেডিট দেখাতে হিন্দু বিরোধীদের সামিল করতেও পিছুপা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০% বিজেপি সমর্থক মনিরুল ইসলামের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে বিরোধ দেখিয়েছে।

যদিও কিছুজনের মত এটাই রাজনীতির চাণক্য নীতি। অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন এই যে- যে নীতি ভোটারদের দূরে সরিয়ে দেয়, কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে, পার্টির ভাবমূর্তি নষ্ট করে সেটা কিভাবে চাণক্য নীতি হতে পারে? নিচুতলার কর্মীরা যার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে পার্টিকে শক্তিশালী করলো তাদের দলে আপন করে নেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত? মনিরুল ইসলামকে পার্টিতে যোগদান করানো কি নিচুতলার কর্মীদের অপমান করা নয়? নাকি মুসলিম ভোটের লোভে এখন BJP পার্টিও মুসলিম তোষণের দিকে এগোচ্ছে এবং মনিরুলকে মাথায় তুলে নাচছে! তৃণমূল কংগ্রেসে ভাঙ্গন ধরাতে গিয়ে BJP নিজের পায়ে কুড়ুল মারছে কিনা, নিজের ভোটারদের অসন্তুষ্ট করছে কিনা সেই নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।



India Rag

Comments

Popular posts from this blog

রুশ ইউক্রেনের টক্কর এখন অতীত! পাকিস্তানের মাটিতে পড়ল ভারতের সুপারসনিক মিসাইল

sangbad pratidin

all links of India Rag